
প্রকাশিত: Sat, Feb 4, 2023 4:03 PM আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 6:56 PM
ত্যাগ আর সেবা হলো নারী জীবনের কাছে পুরুষতন্ত্রের চাওয়া!
সৈয়দা সাজিয়া আফরিন : আমি বলতে গেলে সব ধরনের নারীর সাথে মিশেছি। শিক্ষিত, অশিক্ষিত, চাকরিজীবী, গৃহিনী, ছাত্রী, বড়লোক, গরিব, যুবতী, বৃদ্ধা, ছেলের মা, মেয়ের মা। আমি টেস্ট করে দেখেছি কম্পলিকেটেড সম্পর্কগুলোকেও, বউ-শ^াশুড়ি, ননদ-ভাবি, জা ইত্যাদি। পৃথিবীর সব থেকে স্নিগ্ধ সব থেকে কোমল, সব থেকে নিরাপদ কিছু যদি থাকে সেটা নারীর সাথে নারীর গাঢ় ও গভীর বন্ধুত্ব। আর সময়? সব থেকে মিষ্টি সময়। পুরুষের সাথে প্রেমের একেবারে শুরু শুরুর দিকে সম্পর্কের যে উষ্ণতা-উত্তেজনা থাকে, সেটার থেকেও বেশি সুন্দর নারী ও নারীর নির্দোষ বন্ধুত্ব। আমি বলবো যেকোনো এবং যেকোনো নারী পুরুষের থেকে উত্তম পুরুষের থেকে বেশি উপকারী। হ্যাঁ কিছু নারী থাকে যারা মস্তিষ্ক থেকে শরীর সব পুরুষের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে ওরা সোল্ড, এরা নারী হিসাব থেকে বাদ। ওরা অনেকটাই পুরুষে পরিণত হয়ে যায়।
নারী সেলফ অবসেসড কী না? রূপসী হওয়ার হাঙার আছে কিনা? নারী এংজাইটিতে ভোগে কিনা? নারীর ডিপ্রেশন বেশি কিনা? জেলাসি কিনা? এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ হওয়া সত্ত্বেও নারীকেই আমি মানুষ হিসেবে উত্তম মনে করি। নারী সান্নিধ্যকে গুরুত্ব বেশি দিই। কারণে আসি। পুরুষতান্ত্রিক পরিবারের চাপ, সামাজিক চাপ, উপরি পাওনা হলো লুইচ্চা হ্যান্ডেল করার চাপ, এগুলো নিতে হয় স্কুল গোয়িং মেয়ে থেকে অফিসগামী নারীকে। নারীর এংজাইটি ইস্যু থাকা স্বাভাবিক।
সেলফ অবসেসড? তো হবে না? জন্ম থেকে পরিবার তাকে চাপায়ে দেয় পুরুষতান্ত্রিক ডিজাইনের জীবনযাত্রা, যেখানে নারীর শিক্ষা পাওয়া আর দক্ষ হওয়ার ব্যপার যেমন থাকে তেমনই তাকে চকচকে একটা ত্বকের অধিকারী হওয়ার। তাই নারী ঘনঘন আয়না দেখে, চুল ঠিক করে লিপ্সটিক দেয় একঘণ্টার শপিং করতে তিনঘণ্টা খরচ করে। সমাজ ডিজাইন নারীকে শেখায় তার ত্বক কতো গুরুত্বপূর্ণ!
ডিপ্রেশন? নারী তার ঘাড়ে পৃথিবী নিয়ে ঘোরে। এক মাথায় বিকেলের নাশতা রাতের খাবার হলে অন্য মাথায় এসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার ডেড লাইন, সম্পর্ক থাকার চাপ, সম্পর্ক না থাকার চাপ। বিবাহিত হলে জামাইর পরিবারকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে নিজের পরিবারে গুরুত্ব হারানোর চাপ। সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, জন্ম দিলে লালনপালনের চাপ। এমন মাল্টিটাস্কিং রোবটও সম্ভবত বানানো সম্ভব না। একদিকে মনোযোগ বেশি দিলে অন্যদিক মিইয়ে যায়। মিইয়ে যাওয়া অংশটা তাকে ডিপ্রেশনে ভোগায়।
এংজাইটি? আমার দেখা বেশিরভাগ মেয়ের এংজাইটি ইস্যু আছে। দ্রুত উত্তেজিত হয়ে যাওয়া, যেকোনো কথাকে পারসোনালি নিয়ে অফেন্ডেড ফিল করা, চেঁচামেচি করা এগুলো। এরা কিছু না কিছু বিসর্জন দিয়েছে যা তারা দিতে চায়নি। ত্যাগ আর সেবা হলো নারী জীবনের কাছে পুরুষতন্ত্রের চাওয়া। ওই প্রিয় বিসর্জিত অংশটা নারীকে ডিস্টার্ব ফিল করায় আমরা বাইরে থেকে দেখি শুধু এংজাইটির সিম্পটমটা। এছাড়াও আনডান কাজ, কম্পলিকেটেড প্রেম-ভালোবাসা, বিয়ে নারী আয়ু ক্ষয় করে।
জেলাসি কিনা? উত্তর হলো হ্যাঁ। তবে ততোটুকু না যতোটুক পুরুষতন্ত্র প্রচার করে। এসব ঈর্ষা ক্ষতিকারক না। ঈর্ষার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো হীনমন্যতা। হীনমন্যতার উপাদান বঞ্চিত হওয়া। নারী মাত্রই বঞ্চিত। একটি একটি মেয়েকে জিজ্ঞেস করেন সে যা যাপন করছে এমন জীবন সে চেয়েছিল কি না! কেউ এবং কেউ চায়নি। ওদের একটা একটা খাঁজে বসানো হয়েছে সেখানে ফিট হলেও থাকতে হবে না হলেও থাকতে হবে।
একজন নারীকে অন্য নারীর জন্য এফোর্ড দিতে হবে। যেভাবে বদ বয়ফ্রেন্ডকে ভালো করার শপথ নেন সেভাবে। যেকোনো সম্পর্ক যত্ন দাবি করে। যে সম্পর্কে যত্নটা থাকে সেগুলো ঈর্ষায়, এংজাইটিতে, সেল্ফ অবসেশনে ভাঙে না। সেলফ অবসেসড বন্ধুটাকে বলেন না তুমিই সেরা, তুমি সুন্দর, তুমি ভালো। বললে কী হয়? চোয়াল ফেটে রক্ত বেরোয়? বেরোয় না তো?! এংজাইটি ইস্যুতে থাকা বন্ধুকে কিছুটা সময় দেন উত্তেজনা থেমে আসার। ঈর্ষায় থাকা বন্ধুটি খুব দ্রুত আপনার সফলতা এনজয় করবে যখন দেখবে আপনি তার জন্য উপকারী। আপনার অবস্থান তার কাজে লাগবে। এই এফোর্ডটুকু দেওয়া কঠিন না। আপনার কম্পলিকেটেড প্রেমের থেকে তো সহজ।
আলাদা করে সময় দেন। আড্ডার সময় বের করেন। পরস্পরের আনন্দ জানেন, কষ্ট জানেন। যা বলতে চায় না তা না জানতে খোঁচাখুচি না করেন। বন্ধুদের আলাদা দলে ভাগ করেন। আদর্শিক বন্ধু, একাডেমিক বন্ধু, আত্মীয় বন্ধু, অফিস বন্ধু, পরিচিত বন্ধু, আমি আজ পর্যন্ত কোনো নারীকে নিয়ে কনক্লুসিভ ব্যখ্যা দিনাই। এখনের যেটা অবস্থান সেটা তার দুর্বলতা হতে পারে। তাকে সময় দিই। এতে হয় কী? একটি নিরাপদ বন্ধু বেষ্টনি তৈরি হয়। যা সচরাচর পুরুষের থাকে। পুরুষবন্ধু নিয়ে কিছু বলার নাই। হরমোন নারীকে পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট করে। বন্ধুত্ব প্রেম এসব হয়। শরীর মস্তিষ্কে যা ঘটে সব জৈবিক। এগুলোকে এতো মহান, এতো রোম্যান্টিক, এতো মূল্যবান করে তোলার দরকার নেই। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
